বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড, বিভাগীয় কার্যালয় চট্টগ্রাম কার্যক্রমসমূহঃ
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের আর্থ সামাজিক নিরাপত্তা বিধানসহ তৃণমূল পর্যায়ে অধিকতর কল্যাণ সাধনের লক্ষ্যে সাবেক সরকারি কর্মচারী কল্যাণ অধিদপ্তর ও সাবেক বোর্ড অব ট্রাষ্টিজ (কল্যাণ তহবিল ও যৌথবীমা তহবিল) - কে একীভূত করে বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড নামে একটি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ কর্তৃক গৃহীত বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড নামে একটি বোর্ড আইন, ২০০৪ তারিখ ২৯-০১-২০০৪ মহামান্য রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে রেজিষ্ট্রার্ড ডি-এ-১ অতিরিক্ত সংখ্যায় বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত হয়েছে। এ আইনের বলে সাবেক সরকারি কর্মচারী কল্যাণ অধিদপ্তর ও সাবেক বোর্ড অব ট্রাষ্টিজ (কল্যাণ তহবিল ও যৌথবীমা তহবিল) একীভূত হয়ে বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড নামে ঢাকা মহানগরসহ দেশের ৮ টি বিভাগে কার্যক্রম শুরু করেছে।
বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডে ৩ টি তহবিল রয়েছে। বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড বিভাগীয় কার্যালয়, চট্টগ্রাম ৩ টির কার্যক্রম পৃথকভাবে বর্ণনা করা হলোঃ
(ক) বোর্ড তহবিল:
(০১) ষ্টাফবাস সুবিধা: সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের সময়মত অফিসে যাতায়াতের জন্য বিভাগীয় কার্যালয়, চট্টগ্রাম স্টাফবাস কর্মসূচী পরিচালনা করা হচ্ছে। স্টাফবাসে যাতায়াতের জন্য বড়বাসে প্রতি কিলোমিটারে ০.৬২৫ টাকা হারে ভাড়া আদায় করা হয়। এ কর্মসূচীর অধীনে বর্তমানে ০২ টি বাস চলমান রয়েছে। উক্ত বাসগুলি দ্বারা প্রায় ৮০ জন কর্মকর্তা/কর্মচারিকে স্বল্প ভাড়ায় সময়মত অফিসে আনা নেয়া করা হচ্ছে।
(০২) মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ: সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের স্ত্রী ও কন্যাদেরকে আত্মনির্ভরশীল ও কর্মমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে বিভাগীয় কার্যালয় চট্টগ্রাম মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করা হয়। উক্ত কেন্দ্রে কম্পিউটার ব্যাসিক, গ্রাফিকস ডিজাইন, সেলাই, কনফেকশনারি, বিউটিফিকেশন ও ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। ৩৮তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বর্তমান মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে রুপান্তরিত হয়ে শুধুমাত্র কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নামকরণ করা হয়।
(০৩) শিক্ষা বৃত্তি : প্রজাতন্ত্রের ১৩-২০ গ্রেডের কর্মরত সরকারি কর্মচারিদের সন্তানদের সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান থেকে বছরে একবার নির্দিষ্ট হারে অনধিক দু’সন্তানকে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে (মাষ্টার্স/ইঞ্জিনিয়ারিং/মেডিকেলে) অধ্যয়নের জন্য শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়।
(০৪) দাফন/অন্ত্যে্ষ্টিক্রিয়া অনুদান: প্রজাতন্ত্রের সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী ৭৫ বছর বয়সের মধ্যে মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবারকে টাঃ৩০,০০০/- এবং পরিবারের সদস্যদের মৃত্যুর ক্ষেত্রে টা: ১০,০০০/- দাফন/অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুদান বাবদ প্রদান করা হয়।
(০৫) ক্লাব/কমিউনিটি সেন্টার: সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারিদের বিনোদন ও তাঁদের সন্তানদের খেলাধুলাসহ বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে আবাসিক এলাকায় নতুন ক্লাব/কমিউনিটি সেন্টার স্থাপন এবং সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের দ্বারা পরিচালিত ক্লাব/কমিউনিটি সেন্টারের সংস্কার/মেরামতের জন্য প্রতি বছর আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।
(০৬) বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা: সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারি ও তাদেঁর সন্তানদের খেলাধুলার উন্নয়ন এবং পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়ে থাকে। চট্টগ্রাম বিভাগে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী ও তাঁদের সন্তানদের জন্য প্রতি বছর ডিসেম্বর হতে পরের বছরের ফেব্রুয়ারি এর মধ্যে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
(খ) কল্যাণ তহবিল:
০১। মাসিক কল্যাণ ভাতা: সরকারি ও তালিকাভুক্ত স্বায়ত্বশাসিত সংস্থার অক্ষম/মৃত কর্মকর্তা, কর্মচারির নিজ বা পরিবারকে অনধিক ১৫ (পনের) বছর বা কর্মকর্তা কর্মচারীর অবসর গ্রহণের পর ১০ বছর যা আগে আসে পর্যন্ত সর্বোচ্চ টাঃ২,০০০/- (দুই হাজার) হারে ধারাবাহিকভাবে মাসিক কল্যাণ ভাতা প্রদান করা হয়। এ অনুদানের টাকা আবেদনকারীগণ দেশের সোনালী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা থেকে উত্তোলন করতে পারে।
০২। চিকিৎসা অনুদান: সরকারি ও তালিকাভুক্ত স্বায়ত্বশাসিত সংস্থায় কর্মরত, অক্ষম, অবসরপ্রাপ্ত, মৃত কর্মকর্তা কর্মচারির নিজ ও পরিবারের সদস্যদের জন্য প্রতি বছরে একবার চিকিৎসা সাহায্য হিসেবে ৪ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ সর্বোচ্চ টাঃ ৪০,০০০/- প্রদানের বিধান আছে। কর্মকর্তা কর্মচারী নিজে আমৃত্যু এবং পরিবারের সদস্যগণ কর্মকর্তা কর্মচারীর বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত এ অনুদান প্রাপ্য হবেন।
০৩। শিক্ষাবৃত্তি: সরকারি ও তালিকাভুক্ত স্বায়ত্বশাসিত সংস্থার মৃত, অক্ষম ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্মচারির সন্তানদের সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য বোর্ডের কল্যাণ তহবিল থেকে অনধিক দু’সন্তানকে নবম শ্রেণি থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে (মাষ্টার্স/ইঞ্জিনিয়ারিং/মেডিকেলে) অধ্যয়নের জন্য বছরে একবার নির্দিষ্ট হারে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য যে, শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের জন্য বহুল প্রচলিত জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বৃত্তির হার নিম্নরূপ:
(১) ৯ম ও ১০ম শ্রেণি বা সমমানের শ্রেণির জন্য বছরে টা: ২,৪০০/-।
(২) একাদশ ও দ্বাদশ বা সমমানের শ্রেণির জন্য বছরে টা: ৩,৬০০/-।
(৩) স্মাতক বা সমমানের ডিগ্রী/কোর্সের জন্য বছরে টা: ৪,৮০০/-।
(৪) স্মাতকোত্তর বা সমমানের ডিগ্রী/কোর্স এবং বিএসসি ইঞ্জিঃ ও এমবিবিএস কোর্সের জন্য বছরে টা: ৬,০০০/-।
০৪। দাফন/অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুদান: সরকারি ও তালিকাভুক্ত স্বায়ত্বশাসিত সংস্থার মৃত, অক্ষম ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্মচারির (বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত) পরিবারের নির্ভরশীল কোন সদস্যের মৃত্যুর ক্ষেত্রে টা: ১০,০০০/- দাফন/অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুদান বাবদ প্রদান করা হয়।
(গ) যৌথবীমার এককালীন অনুদান:
সরকারি ও তালিকাভুক্ত স্বায়ত্বশাসিত সংস্থায় চাকরিরত অবস্থায় কোন কর্মকর্তা কর্মচারির মৃত্যু হলে তাঁর পরিবারকে উক্ত কর্মচারির সর্বশেষ ২৪ (চবিবশ) মাসের মূলবেতনের সমপরিমাণ অর্থ সবোর্চ্চ ২ (দুই) লাখ টাকা যৌথবীমার এককালীন অনুদান হিসেবে প্রদান করা হয়।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস